মোবাইল নাম্বার দিয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স চেক করার নিয়ম

মোবাইল নাম্বার দিয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স চেক করার নিয়ম ,বর্তমান ডিজিটাল যুগে আমরা মোবাইলের মাধ্যমে ঘরে বসে প্রায় অনেক ধরনের কাজ অনলাইনের মাধ্যমে করে থাকি । তার মধ্যে মোবাইল নাম্বার দিয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স চেক অন্যতম। ড্রাইভিং লাইসেন্স চেক করার জন্য ডিজিটাল পদ্ধতির ব্যাবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।প্রতারনা ও দালাল চক্রের হাত থেকে বাঁচার জন্য মোবাইল নাম্বার দিয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স চেক করা অত্যান্ত জরুরী।
মোবাইল-নাম্বার-দিয়ে-ড্রাইভিং-লাইসেন্স-চেক-করার-নিয়ম
আগে যেখানে অফিসে গিয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স যাচাই করার জন্য দিনের পর দিন ঘুরতে হতো, সেখানে এখন কয়েক ধাপ অনুসরন করে আপনি নিজের মোবাইল নাম্বার ব্যাবহার করে ঘরে বসে অতি সহজেই আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স চেক করতে পারবেন। এতে করে আপনি হয়রানি ও সময় উভয়ের হাত থেকে বেঁচে যাবেন। তাই মোবাইল নাম্বার দিয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স চেক করার নিয়ম সম্পর্কে জানতে হলে আজকের এই আর্টিকেলটি পড়তে হবে।

পেজ সূচিপত্রঃ  

ড্রাইভিং লাইসেন্স আমাদের জীবনে একটি গুরুত্বপুর্ন বিষয়, বিশেষ করে যাদের একটি গাড়ী আছে এবং যারা পেশাদার ড্রাইভার ,তাদের জন্য রাস্তাঘাটে চলাচল করতে গেলে অবশ্যই ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রয়োজন।কিন্তু অনেকে জানেনা কিভাবে একটি ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদন করতে হয় ও একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স মোবাইলের মাধ্যমে চেক করতে হয়, যা আলোচনা করা হয়েছে আজকের এই আর্টিকেলের মধ্যে।আর্টিকেলটি পড়লে আপনি জানতে পারবেন কিভাবে মোবাইলের মাধ্যমে ড্রাইভিং লাইসেন্স চেক করতে হয় কত টাকা লাগে ও কি কি কাগজ পত্র লাগবে ।

আরো পড়ুনঃ পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে সৌদি ভিসা চেক করার সহজ উপায়

মোবাইল নাম্বার দিয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স চেকঃ

ড্রাইভিং লাইসেন্স চেক করার জন্য বিভিন্ন রকমের মাধ্যম রয়েছে তার মধ্যে একটি হলো মোবাইল নাম্বার দিয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স চেক। চলুন বিস্তারিত জেনে নিন কিভাবে আপনি মোবাইল নাম্বার দিয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স চেক করবেন।
  • আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্সটি মোবাইল নাম্বার দিয়ে চেক করার জন্য প্রথমে আপনাকে মোবাইলের মেসেজ অপশানে যেতে হবে।
  • তারপর আপনাকে DL রেফারেন্স নাম্বারটি ভালো করে লিখতে হবে
  • এবার পরবর্তী ধাপে গিয়ে আপনাকে মেসেজটি 26969 নাম্বারে পাঠাতে হবে
  • এইবার উপরের কাজ গুলো সঠিক ভাবে করা হয়ে গেলে কিছুক্ষনের মধ্যে আপনার মোবাইলে একটি ফিরতি মেসেজ চলে আসবে।
  • ফিরতি মেসেজটি ভালোভাবে মনোযোগ দিয়ে পড়ুন ,দেখবেন ড্রাইভিং লাইসেন্সটি সম্পর্কে সমস্ত তথ্য দেওয়া আছে।
  • আশা করছি উপরের বিষয়টি আপনি ভালোও ভাবে বুঝতে পেরেেছেন।কিন্তু ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য অনেক কিছুর প্রয়োজন লাগে । আপনি যদি জানতে চান কি কি প্রয়োজন লাগে তাহলে নিচের অংশ টুকু পড়তে পারেন।

ড্রাইভিং লাইসেন্স  করতে যা যা প্রয়োজনঃ

ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য প্রথমে আপনাকে BRTA এর অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে । আর আবেদন করার জন্য কি কি কাগজ পত্রের প্রয়োজন হয় চলুন তা বিস্তারিত জেন নিন ।
ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে যা যা দরকারঃ
  • যে ব্যক্তি ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করবেন তার ছবি ১কপি।
  • ছবির সাইজ ৩০০*৩০০ পিক্সেল এবং ১৫০ কিলোবাইট এর মধ্যে হতে হবে।
  • আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা জন্ম নিবন্ধন অথবা পাস পোর্ট এর কপি।
  • আবেদনকারীর বর্তমান ঠিকানার প্রমান পত্র হিসেবে বিদ্যুৎ ,পানি অথবা গ্যাস বিলের কপি।
  • রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের স্বাক্ষর কৃত মেডিকেল সার্টিফিকেট। সার্টিফিকেট এর ফরমেট স্ক্যান কপি হতে হবে।
  • ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন ফি জমা দিতে হবে

ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার উপায় সমুহঃ

আমরা অনেকেই মনে করি ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে এক ধরনের ঝামেলা পোহাতে হয়, কিন্তু আমরা কিছুই শর্ত পুরন করলেই অতি সহজেই আমাদের সেই কাংক্ষিত ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে পারি।
এবার চলুন দেখা যাক কিভাবে আমরা অতি সহজে ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে পারি। অনলাইনে ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য আপনাকে BRTA অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রথমে নিবন্ধন করতে হবে ।তারপর আপনার দেওয়া পরীক্ষার স্থান হিসেবে যে স্থান নির্বাচন করেছেন বা করবেন সে স্থানে যথা সময়ে উপস্থিত হতে হবে।


সর্বপ্রথম আপনাকে ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদনের জন্য বিআরটিএর যে অনলাইন সার্ভিস পোর্টাল আছে সেখানে প্রবেশ করতে হবে (www.bsp.brta.gov.bd)

  • আবেদনকারীর এনআইডি কার্ড ব্যবহার করে একটি অ্যাকাউন্ট বানাতে হবে।
  • আপনার ইউজার প্রোফাইলে গিয়ে আপনার জেলা বিভাগ থানা সহ যে সকল তথ্য আছে সবগুলো সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে।
  • তারপর নির্ধারিত দিনে অন্যান্য যে সকল কাগজপত্র লাগবে সেগুলো নিয়ে স্বশরীরে পরীক্ষা কেন্দ্রে উপস্থিত হতে হবে।
  • যারা পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স নিতে চান তাদেরকে অবশ্যই ড্রপ টেস্ট রিপোর্ট স্ক্যান করে সেটা আপলোড করতে হবে
  • ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য নির্ধারিত ফি, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ অনুমোদনের জন্য প্রদান করতে হবে।
  • তারপর কর্তৃপক্ষ আপনার জন্য স্মার্ট কার্ড তৈরি করে ,আপনাকে অবহিত করবেন।

ড্রাইভিং লাইসেন্স কিভাবে করবেন 

বর্তমান ডিজিটাল যুগে আপনি ঘরে বসে খুব সহজে একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে পারবেন।
যেখানে আগে একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য দিনের পর দিন অফিসে ঘুরতে হতো, সেখানে আপনি অনলাইনের মাধ্যমে ঘরে বসে ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে পারেন।ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদন করার জন্য আপনার একটা স্মার্ট ফোন অথবা ল্যাপটপ/ডেক্সটপ থাকতে হবে ,যেখানে নেট কানেকশন দিতে হবে , তারপর BRTA এর সাইডে প্রবেশ করতে হবে , (www.bsp.brta.gov.bd)
মোবাইল-নাম্বার-দিয়ে-ড্রাইভিং-লাইসেন্স-চেক-করার-নিয়ম
তারপর লার্নার জন্য একটি আবেদন করতে হবে ,লার্নার কার্ডের আবেদন সঠিকভাবে করার পর BRTA কর্তৃপক্ষ আপনাকে একটি নির্দিষ্ট তারিখ জানিয়ে দিবে সেই তারিখে উপস্থিত হয়ে নির্দিষ্ট কেন্দ্রে আপনার বায়োমেট্রিক লিখিত পরীক্ষা এবং ভাইভা পরীক্ষা এবং ফিল্ড টেস্ট পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে ,সবগুলো পরীক্ষায় আপনি উত্তীর্ণ হলে অফিস আপনাকে আপনার রেজাল্ট তারপর BRTA নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে সকল কাগজপত্র অফিসে জমা দিলে আপনার সেই কাঙ্খিত ড্রাইভিং লাইসেন্স ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে পেয়েযাবেন।

অনলাইনে ড্রাইভিং লাইসেন্স ডাউনলোড করার নিয়ম

আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্সের সকল কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর এবার পালা আপনার সে কাঙ্খিত ড্রাইভিং লাইসেন্স ডাউনলোড করার । চলুন দেখা যায় কিভাবে একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স ডাউনলোড করা যায়,
ডাউনলোড করার জন্য সর্বপ্রথম আপনাকে বি আর টি এ এর সার্ভিস পোর্টালে ওয়েব সাইটে প্রবেশ করতে হবে সেখান থেকে আপনি আপনার ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে ড্রাইভিং লাইসেন্সটি ডাউনলোড করতে পারবেন ।

ডাউনলোড করার বিস্তারিত টিপস নিচে দেওয়া হলঃ


  • ড্রাইভিং লাইসেন্স ডাউনলোড করার জন্য  (www.bsp.brta.gov.bd) লগইন  করে ওয়েবসাইটে আপনাকে প্রবেশ করতে হবে ।
  • এরপর আপনার সামনে ইউজার লগইন নামে একটি অপশন আসবে সেখানে আপনি থেকে ড্রাইভিং লাইসেন্স আবেদন লেখা আছে সেখানে ক্লিক করুন 
  • তাহলে আপনার সামনে অনেকগুলো তথ্য চলে আসবে যেমন আবেদনের ধরন সার্ভিস আইডি নাম্বার আবেদনের তারিখ আবেদনকারীর নাম পরীক্ষার স্থান ইত্যাদি
  • এই বার অপশান গুলো যথা যথ ভাবে পুরন করুন।
  • এবার আপনি যদি ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষায় পাশ করে থাকেন এবং আপনি আবেদন করে থাকেন তাহলে আপনার সামনে চলে আসবে আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স টি 
  • সেখান থেকে ডাউনলোড করুন। 

ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কত দিন লাগে

আমরা যারা ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করে থাকি তাদের মনে একটাই প্রশ্ন কত দিন সময় লাগতে পারে,অনেকেই জানেন না যে ড্রাইভিং লাইসেন্স আবেদন করার পর কতদিন সময় লাগতে পারে , তবে বর্তমান ডিজিটাল যুগে অনেক কম সময়ে আপনি আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স্টি হাতে পেয়ে যেতে পারে ।


আপনি যদি ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য আবেদন করেন প্রথমে আপনাকে লার্নার লাইসেন্স পাওয়ার জন্য আবেদন করতে হয় সেটা প্রসেসিং হতে সাত থেকে দশ দিন সময় লাগে তারপর আপনার নির্দিষ্ট দিনে বায়োমেট্রিক লিখিত পরীক্ষার ভাইভা পরীক্ষা শেষ করার পর প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র BRTA অফিসে জমা দিলে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রস্তুত হতে ১৫ থেকে ২০ দিনের মত সময় লাগতে পারে। তবে কারো কারো ক্ষেত্রে আবেদনের ধরণের উপর ভিত্তি করে এই সময় কম বেশি হতে পারে ।

ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে যত টাকা খরচ ঃ

ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য আমাদের সকলেরই মনে সর্বপ্রথম যে প্রশ্নটি জাগে মোট কত টাকা লাগে এবার চলুন জেনে নেওয়া যাক একটু ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে আপনাকে সর্বমোট কত টাকা খরচ করতে হবে
লাইসেন্স ফি আপনাকে দুই ভাবে পরিশোধ করতে হয় 

১।প্রথম  যখন লার্নার করবেন তখনঃ
  • মোটরসাইকেল লাইসেন্সের জন্য ৭৪৮ টাকা ।
  • এবং অন্যান্য যানবাহনের ক্ষেত্রে ৫১৫ টাকা ।
২।স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ক্ষেত্রে ঃ
  • পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স এর জন্য ১৬৮০ টাকা
  • অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স এর জন্য ২৫৪২ টাকা
  • আন্তর্জাতিকভাবে ড্রাইভিং লাইসেন্স এর জন্য ২৫০০ টাকা
  • বিআরটিএ র যে সকল পরীক্ষা নেওয়া হয় তার ফলাফল এর জন্য নির্ধারিত ফি অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য ৪৪৯৭ টাকা
  • এবং পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স এর জন্য ২৭৭২ টাকা।

মোবাইল-নাম্বার-দিয়ে-ড্রাইভিং-লাইসেন্স-চেক-করার-নিয়ম
শেষ কথা ঃ

সব শেষ কথা হচ্ছে মোবাইল নাম্বার দিয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স চেক করার নিয়ম এই আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অশেষ অশেষ ধন্যবাদ সেই সঙ্গে আপনি এই আরটিকালের মাধ্যমে জানতে পারলেন কিভাবে একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স মোবাইল নাম্বার দিয়ে চেক করা যায় এবং একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য যে সকল অনুসরণ করতে হয় সবগুলোই আপনাদের দেখাতে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি


প্রিয় পাঠক আজকের আমরা আপনাকে জানিয়েছি মোবাইল নাম্বার দিয়ে কিভাবে ড্রাইভিং লাইসেন্স এর সঠিকতার চেক করা যায় এবং একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কি কি জিনিসের প্রয়োজন হয় তা ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছেন আশা করছি আর যদি এই আর্টিকেলটি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে দয়া করে বেশি বেশি শেয়ার করুন। আর এ ধরনের তথ্য পেতে যোগাযোগ করুন আমাদের ফেসবুক , হোয়াটস অ্যাপ, অথবা এই ওয়েব সাইটের মাধ্যমে www.smartzonbd.com


 


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

স্মার্টজোনবিডির নীতি মালা মেনে কমেন্ট করুননীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url
Md. Md. Asraful Islam
Md. Asraful Islam
একজন ডিজিটাল মার্কেটিং এক্সপার্ট । তিনি অনলাইন ইনকাম, ব্লগিং, SEO ও টেকনোলজি নিয়ে নিয়মিত লেখালেখি করেন।