ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা

ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকায় নিয়ে আজকে আমাদের এই লেখা। বর্তমানে মানুষের বিভিন্ন ধরনের রোগে হঠাৎ আক্রমণ হয়ে যাচ্ছে তার ,মধ্যে একটি অন্যতম হলো ডায়াবেটিস। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে রোগীদের অবশ্যই কিছু খাবার তালিকা থেকে নিষিদ্ধ করতে হবে এবং সঠিক খাদ্য তালিকা সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হবে। কারণ ভুল খাদ্যাভাস ডায়াবেটিস রোগীর স্বাস্থ্যের মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে যা ডায়াবেটিস রোগীদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য হুমকি স্বরূপ হয়ে দাঁড়ায় ।ডায়াবেটিস রোগীদের নির্দিষ্ট কিছু খাবার এড়িয়ে  চলা প্রয়োজন। তাই ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা রোগীদের মেনে চলা পরিহার্য। 

ডায়াবেটিস-রোগীর-নিষিদ্ধ-খাবার-তালিকা

ডায়াবেটিস রোগ যদি একবার কারো শরীরে বাসা বাঁধে তাহলে তা পুরোপুরি নিরাময় হয় না ,তবে এটি বিভিন্ন ধরনের খাদ্যাভ্যাস এবং শারীরিক ব্যায়াম মেনে চললে সেটার নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়।

পেইজ সুচিপত্রঃডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা

ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা:

ডায়াবেটিস এমন একটি মারাত্মক রোগ যা একবার যদি কারো শরীরে এই রোগ বাসা বাধে তাহলে তা পুরোপুরি নিরাময় যোগ্য হয়ে ওঠে না, তবে সঠিক চিকিৎসা ও সঠিক খাদ্যাভ্যাসের কারণে তা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় অনেকটাই। 
তাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে খাবারের প্রতি আমাদের বিশেষ নজর দেওয়ার দরকার এবং কিছু খাবার পুরোপুরি বর্জন করা উচিত।কারণ এই খাবারগুলোর ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায় এবং শারীরিক বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দেয়।

আজকের এই আর্টিকেলে আপনাদের বুঝার সুবিধার্থে নিচে ডায়াবেটিস রোগীদের নিষিদ্ধ খাবারের তালিকা তুলে ধরা হলো: 

  • মিষ্টি ও চিনি জাতীয় খাবার:
  • চর্বিযুক্ত ও অতিরিক্ত তেলে ভাজা খাবার
  • দুধের তৈরি খাবার
  • অতিরিক্ত লবণ যুক্ত খাবার
  • শুকনো ফল
  • প্রক্রিয়াজাতকরণ মাংস
  • দুধ চা ও চিনি যুক্ত চা বা কফি
  • ফাস্টফুড জাতীয় খাবার
  • প্রাকৃতিক চিনি সমৃদ্ধ খাবার
  • উচ্চ চিনি যুক্ত পানীয়
  • অ্যালকোহল জাতীয় পানীয়

মিষ্টি ও চিনি জাতীয় খাবার:

ডায়াবেটিস-রোগীর-নিষিদ্ধ-খাবার-তালিকা

ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকায় প্রথমেই যে খাবারগুলো রাখতে হবে সেটি হচ্ছে চিনি ও মিষ্টি জাতীয় খাবার। এই জাতীয় খাবার ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এই ধরনের খাবারে রক্তের শর্করার মাত্রা অতি দ্রুত বাড়িয়ে দেয় , যার কারণে ডায়াবেটিস রোগীদের শুধু ডায়াবেটিসই নয় রক্তের শর্করা বাড়ার সাথে সাথে বিভিন্ন ধরনের রোগের বাসা বাঁধে তাদের শরীরে যেমন হৃদরোগ ,  কিডনি রোগ ও বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারেরও ঝুঁকি বাড়ায়। 

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য মিষ্টি ও চিনি যুক্ত খাবার যেমন মিষ্টি, চকলেট, কেক ,মিষ্টিবিস্কুট ,তাদের সম্পূর্ণভাবে এড়িয়ে চলা অত্যন্ত জরুরি। চিনি রক্তের শর্করার মাত্রা খুব দ্রুত বাড়িয়ে দেয় ,যা ইনসুলিনের কার্যকারিতা কমে দেয় এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রন করতে খুব জটিলতায় পড়তে হয়। ইনসুলিন হল একটি হরমোন যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।চিনি খাওয়ার পর রক্তের শর্করা মাত্রা দ্রুত বাড়িয়ে দেয়,  দীর্ঘদিন এই অবস্থা চলতে থাকলে  ইনসুলিন এর অভাব দেখা দিতে পারে। এছাড়া মিষ্টি ও চিনি জাতীয় খাবার শরীরের ওজন দ্রুত বৃদ্ধি করে যার  ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে অনেক জটিলতা বাড়তে পারে। 

চর্বিযুক্ত ও অতিরিক্ত তেলে ভাজা খাবার :

ডায়াবেটিস রগীদের নিষিদ্ধ খাদ্য তালিকায়,আরো কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো বেশি চর্বিযুক্ত এবং অতিরিক্ত তেলে ভাজা খাবার ।এই খাবারগুলো ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এড়িয়ে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদিও আমাদের শরীরে সামান্য কিছু পরিমাণ চর্বিযুক্ত খাবারের দরকার পড়ে বেশি চর্বিযুক্ত খাবার খেলে ওজন বাড়ে এবং আরো অনেক স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুকি বাড়ে ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে। বিশেষ করে বেশি চর্বিযুক্ত খাওয়ার কারনে রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন করে তোলো এবং ডায়াবেটিসের জটিলতা বাড়িয়ে দেয় যার ফলে হৃদরোগ ও ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়তে পারে।

যদিও চর্বিযুক্ত খাবারের অনেক পরিমাণ  ক্যালরি থাকে যার শরীরে শক্তি যোগায় কিন্তু চর্বিযুক্ত খাবার কম পরিমাণে খেলেও শরীরের প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি যোগ হয় যার ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এই অতিরিক্ত ক্যালোরি ওজন বৃদ্ধি   ইনসুলিন  রোধ হতে পারে। ইনসুলিন রোধ হলে শরীরের কোষগুলো ইনসুলিন এর প্রতি সংবেদনশীলতা হারায় ফলে রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা আরো কঠিন হয়ে পড়তে পারে। 

এছাড়াও সব ধরনের চর্বিযুক্ত খাবারই ক্ষতিকর নয় যেমন অলিভ অয়েল ,অ্যাভোকোডা এবং বাদামে যে পরিমাণ স্বাস্থ্যকর চর্বির শরীরের জন্য উপকারী সেগুলো রয়েছে এই ধরনের চর্বি হৃদরোগের ঝুকি কমাতে পারে এবং রক্তের ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের এই ধরনের স্বাস্থ্যকর চর্বি যুক্ত খাবার খাওয়া যেতে পারে। তবে ডাক্তারের পরামর্শে খাওয়া উচিত হবে।

দুধের তৈরি খাবার:

ডায়াবেটিস রোগীদের দুধ বা দুধের তৈরি খাবার খাওয়ার সময় কিছুটা সতর্ক থাকা দরকার । কারণ দুধে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ,প্রোটিন এর মত অনেকগুলো উপাদান থাকে।অনেক দুগ্ধ্জাত খাবারের উচ্চমাত্রায় ফ্যাট থাকে এই ফ্যাট ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় এবং হৃদরোগের ঝুকি তৈরি করতে পারে। 

তবে সব প্রকারের দুধের তৈরি খাবার ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকর নয় যেমন কম চর্বিযুক্ত দুধ ও দই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ভালো হতে পারে সাধারণত দিনে এক গ্লাস দুধ খাওয়া  যেতে পারে। 

তবে দুধের তৈরি খাবার ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কতটুকু  খাওয়া উচিত তা নিয়ে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত কারণ প্রতিটি ডায়াবেটিস রোগীর শারীরিক অবস্থা আলাদা আলাদা ।তাই তাদের খাদ্য তালিকায় আলাদা আলাদা হওয়া উচিত। ডাক্তার রোগীর স্বাস্থ্যের অবস্থা বিবেচনা করে সবচেয়ে উপযুক্ত পরামর্শ দিয়ে থাকেন । তাই ডায়াবেটিস রোগীদের ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খাবার খাওয়া উচিত। 

অতিরিক্ত লবণ যুক্ত খাবার:

প্রত্যেকটি খাবারের স্বাদ বাড়ানোর জন্য লবণ একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ,কিন্তু ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য লবণ গ্রহণ এর ক্ষেত্রে অবশ্যই সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে। 

অতিরিক্ত লবণ গ্রহণের ফলে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ে এবং উচ্চ রক্তচাপ হৃদরোগ এবং কিডনি রোগের মত গুরুত্বপূর্ণ জটিলতার একটি প্রধান কারণ হতে পারে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে লবণের পরিমাণ কমানো অত্যন্ত জরুরী একটি বিষয়। 

কিছু ক্ষেত্রে গবেষণায় দেখা গেছে সাধারণ লবণের চেয়ে বিট লবণ ডায়াবেটিস এবং রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে কিছুটা বেশি কার্যকর হতে পারে বিট লবণে থাকা নাইট্রেট উচ্চ রক্তচাপ কমাতে ও ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়াতে সহায়তা করে তবে এ বিষয়ে আরো গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে। 
বিট লবনের ক্ষেত্রে কিছু উপকারিতা থাকলেও ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে বিট লবনের পরিমাপ সম্পর্কে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত হবে। 

শুকনো ফল :

শুকনো ফল সাধারণত স্বাস্থ্যকর মনে হলেও ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি একটি ক্ষতিকারক বিষয় হয়ে দাঁড়াতে পারে ,কারণ শুকনো ফলে চিনির পরিমাণ খুবই বেশি থাকে যেমন ১০০ গ্রাম শুকনো খেজুরের প্রায় ৫০ গ্রাম চিনি থাকে একই পরিমাণ কিসমিসেও প্রায় ৫০ গ্রাম চিনি থাকে এই বেশি চিনি যুক্ত খাবার দ্রুত রক্তের শর্করার মাত্রা বাড়ায় এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সমস্যার সৃষ্টি তৈরি করতে পারে ।

ডায়াবেটিস রোগীদের শুকনো ফল খেতে চাইলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী অন্য কিছু খাবারের সাথে মিশে খুব সীমিত আকারে খাওয়া যেতে পারে। 

প্রক্রিয়াজাতকরণ মাংস :

প্রক্রিয়াজাতকরণ মাংস স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ক্ষতিকর হতে পারে কারণ এতে অনেক ক্ষতিকারক রাসায়নিক থাকে যা টাটকা মাংসে থাকে না । এই ক্ষতিকারক রাসননিক প্রধানত শরীরের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে ।এছাড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ মাংসে সোডিয়ামের পরিমাণ খুব বেশি থাকে। অতিরিক্ত সোডিয়াম উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদরোগের মতো গুরুত্বপূর্ণ রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে, এবং 
প্রক্রিয়াজাত করণ মাংসের তুলনায়, টাটকা মাংসের পুষ্টিগুন অনেক বেশি থাকে ।অনেক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত প্রক্রিয়াজাতকরণ মাংস খাওয়ার কারণে বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার, ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে ।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রক্রিয়াজাতকরণ মাংসকে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী খাবার হিসাবে ঘোষণা করেছেন। তাই আমাদের সুস্থ থাকতে প্রক্রিয়াজাতকরণ মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকায় উচিত হবে। 
এই প্রক্রিয়াজাতকরণ মাংসর খাবারের পরিবর্তে আমরা প্রতিদিন টাটকা মাছ ,মুরগির মাংস,শাক-সবজি বাদাম ,আখরোট এগুলো খাওয়া উচিত এই খাবারগুলোর প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান রয়েছে এবং সুস্থ্য জীবন যাপনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য যে খাবারগুলো গ্রহণ করবেন ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে করায় উচিত হবে।

দুধ চা ও চিনি যুক্ত চা বা কফিঃ

ডায়াবেটিস রোগীদের সব সময় যে খাবারগুলো গ্রহণ করবে তা ভেবে চিন্তে করা উচিত, ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য দুধ চা, চিনি যুক্ত চা এবং কফি এগুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকায় উত্তম ।এই ধরনের খাবারে রক্তের শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়িয়ে দেয় যা ডায়াবেটিস এর নিয়ন্ত্রণকে কঠিন করে তোলে ।চা এবং কফিতে থাকা ক্যাফেইন হৃদ স্পন্দন বাড়ায় এবং রক্তচাপকে প্রভাবিত করতে পারে যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক হতে পারে ।

প্রতিদিন এক থেকে দুই কাপ চা পান করা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য স্বাস্থ্যকর নয় বা উচিত নয় অতিরিক্ত ক্যাফিন অস্থিরতা ঘুমের সমস্যা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে তাই ডায়াবেটিস রোগীদের চা ,কফি পান থেকে বিরত থাকায় উচিত।তবে চিনি ছাড়া চা দিনে একবার খাওয়া যেতে পারে।

ফাস্টফুড জাতীয় খাবার :

ফাস্টফুড জাতীয় খাবার একটি লোভোনীয় খাবার ,যা আমাদের প্রতিনিয়ত খেতে ইচ্ছা করে কিন্তু এগুলো শরীরের জন্য খুবই মারাত্মক ক্ষতি কর স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে পড়ে। আর ডায়াবেটিস রোগীদের অবশ্যই সব ধরনের ফাস্টফুড জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলাই উচিত হবে ।

প্রাকৃতিক চিনি সমৃদ্ধ খাবার:

প্রাকৃতিক চিনি সমৃদ্ধ খাবার যেমন মধু ,খেজুর,কিসমিস, গুড় এগুলো অতি দ্রুত শরীরের বা রক্তে শর্করার  পরিমাণ বাড়িয়ে দেয় যা স্বাস্থ্য জন্যে মারাত্তক ক্ষতি হতে পারে তাই ডায়াবেটিস রোগীদের এগুলো থেকে নিরাপদে থাকা উচিত হবে।

উচ্চ চিনি যুক্ত পানীয়:

 উচ্চ চিনি যুক্ত পানীয় খাবার যেমন কোল্ড ড্রিঙ্ক , সেভেনআপ ,আর সি,এই জাতীয় খাবারগুলো ডায়াবেটিস রোগীদের এড়িয়ে চলায় উত্তম ,কারণ এগুলোতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ফ্যাট যা উচ্চরক্তচাপ,রক্তে শর্করার পরিমান অতি দ্রুত বাড়িয়ে দেয় এবং স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়তে পারে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের উচ্চ চিনি যুক্ত পানীয় করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় :

অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় অবশ্যই সকল ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে বর্জনীয় কারণ, অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় শরীরের দ্রুত ওজন বৃদ্ধি করে রক্তচাপ বাড়ায় স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় এবং হৃদরোগের সমস্যা সৃষ্টি করে। তাই অবশ্যই দায়াবেটিস রয়েছে এমন রোগীদের অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় পান করা থেকে দুরে থাকতে হবে।

কেন এই খাবারগুলো থেকে বিরত থাকতে :

উপরের যে খাবার নিয়ে আমরা আলোচনা করলাম তা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ডাক্তারের পরামর্শ ক্রমে বিরত থাকা উচিত বলে মনে করি,কারণ ওই খাবারগুলো ইনসুলিন এর কার্যকারিতা কমিয়ে দেয় শরীরের ওজন বৃদ্ধি করে কার্ডিওভাস্কুলার ঝুঁকি বৃদ্ধি করে রক্তের শর্করার দ্রুত বৃদ্ধি পায় শরীরের ওজন বৃদ্ধি পায় এছাড়াও এই খাবারগুলো গ্রহণ করলে উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি রোগ ,ক্যান্সার এই রোগ গুলো হওয়ারও বিশেষ সম্ভাবনা থেকে থাকে। তাই অবশ্যই ডাইবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে এই নিষিদ্ধ খাবার গুলো বর্জন করা উচিত বলে মনে হবে।

ডায়াবেটিস রোগীদের খাবারের সতর্কতা:

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খাবারের প্রতি বিশেষ সতর্কতা হওয়া জরুরি ।কারণ নির্দিষ্ট সময়ে খাবার খেলে শরীরে শর্করার  মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা অনেক সহজ হয়। যারা খাবারের আগে ইনসুলিন ব্যবহার করেন তাদের প্রতিদিনের রুটিনে নির্দিষ্ট সময়ে খাবার খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ । প্রতিদিন নিয়মিত সময়ে খাওয়ার অভ্যাস করলে শরীরের উপর একটাই ইতিবাচক প্রভাব পড়ে যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে অনেকটাই সহায়ক হিসেবে কাজ করে।

খাবারে নিয়ম মানার পাশাপাশি শারীরিক ব্যায়ামও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন ভোর সকালে অন্তত এক ঘন্টা করে হাটাহাটি করলে শরীরে রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং স্ট্রোক এর ঝুকি কমায় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। 

রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়মিত পরীক্ষা করতে হবে। নিয়মিত পরীক্ষার মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন শরীরের বা রক্তের শর্করার মাত্রার নিয়ন্ত্রণে আছে কিনা। এবং নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ ও পরীক্ষা নিরীক্ষা করে নিয়মিত ঔষুধ সেবন করতে হবে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক খাদ্য:

ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে কিছু সহায়ক খাদ্য আপনি প্রতিদিনের রুটিনে রাখতে পারেন যেমন ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার বা ফল সমূহ এর মধ্যে রয়েছে কমলা ,পাকা পেঁপে্আ‌পেল ,লেবু ইত্যাদি। কার্বোহাইড্রেট হিসেবে পরিমিত স্বল্প পরিমাণ  ভাত , রুটি, সুজি , চিড়ে,মুড়ি, ব্রাউন ব্রেড খাওয়া যেতে পারে তবে এটি খাওয়ার সময় পরিমাণের দিকে অবশ্যই নজর রাখতে হবে। 
ডায়াবেটিস-রোগীর-নিষিদ্ধ-খাবার-তালিকা

শাকসবজির ক্ষেত্রে করলা, পালং শাক ,ব্রকলি , ফুলকপি এগুলো খেতে পারেন এছাড়াও আপনি সিদ্ধ ডিম ,চর্বি ছাড়াই মুরগির মাংস , কবুতরের মাংস , মাছ ইত্যাদি খেতে পারেন ।
এছাড়াও আপনি বাদাম ,আখরোট , চিনা বাদাম , এগুলো পরিমিত আকারে নিয়মিত খেতে পারেন।
ডায়াবেটিস রোগীরা প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করবেন , চিনি ছাড়া লেবুর শরবত পান করবেন এবং ভেষজ চা,চিনি ছাড়াই পান করতে পারেন।

ডায়াবেটিস রোগীদের ডায়েট কন্ট্রোলের জন্য অবশ্যই যা করতে হবে:

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সকালের নাস্তা একটু বেশি পরিমাণ বা ভারি নাস্তা করতে হবে ।দুপুরে মাঝারি ধরনের খাবার খেতে হবে এবং রাত্রে খুব হালকা পরিমাণ খাবার খেতে হবে। কারণ রাতের খাবার বেশি খেলে রক্তের শর্করার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। 

ডায়াবেটিস রোগীদের নিয়মিত খাবার খাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ কাজ কারণ দীর্ঘ সময় খালি পেটে থাকলে শর্করার পরিমাণ কমে যেতে পারে ও শারীরিক বিপদ ডেকে আনতে পারে ।দুই বেলা খাবারের মাঝে স্বাস্থ্যকর কিছু খাবার যেমন শসা ,টক দই,সেদ্ধ ডিম ,ছোলা, বাদাম ইত্যাদি খেতে পারেন এই খাবারগুলোতে ফাইবার প্রোটিন এর উপস্থিত থাকে। তবে ডায়াবেটিস রোগীর উচিত হবে যে খাবারই গ্রহন করেন না কেন ,সব কিছুই এক জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে করা উচিত।

ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকার শেষ কথাঃ

ডায়াবেটি স রোগীদের নিষিদ্ধ খাবার তালিকা আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা চেষ্টা করেছি কিভাবে একজন ডায়াবেটিসের রোগীর খাবার গ্রহণ করতে হয় এবং কি কি খাবার খেলে শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে বাট ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় সে সম্পর্কে আলোচনা চেষ্টা করি 

এই আর্টিকেলে ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে সাথে যে খাবারগুলো গ্রহণ করা যাবে সে সম্পর্কেও কিছু আলোচনা করা হয়েছে তবে যাদের ডায়াবেটিস আছে তারা নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম এবং নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চলবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

স্মার্টজোনবিডির নীতি মালা মেনে কমেন্ট করুননীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url
Md. Md. Asraful Islam
Md. Asraful Islam
একজন ডিজিটাল মার্কেটিং এক্সপার্ট । তিনি অনলাইন ইনকাম, ব্লগিং, SEO ও টেকনোলজি নিয়ে নিয়মিত লেখালেখি করেন।